About Me

My photo
কিছু শব্দ এলোমেলো ঝরতে থাকে বাতাস লাগলে...তারই কিছু কুড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা

Saturday 27 February 2016

মানচিত্র



কাগজের বুক চিড়ে
নটরাজ পেন্সিলের তীক্ষ্ণ আচড়ে
দেশ আঁকতে শিখেছিলাম
সেই কবে কোনকালে
চারদেওয়ালের ক্লাসরুমে বসে|
কপাল আমার!
সেই স্কুলের আকাশী রঙের দেওয়াল ছাড়িয়ে
এই কৃষ্ণমহাদেশে
তবু দেশ আঁকতে শিখলাম কই?

দেওয়ালে টাঙানো ম্যাপের
উপর ঝাপিয়ে পরি
হাতে খাপ খোলা পেন্সিল
শানিত নিবের দংশনে
সীমান্ত ছিড়ে ফালাফালা করি|
কিন্তু মানচিত্র ধরে দেয় কই?

ধারালো পেন্সিলের কামড়ে কামড়ে
উষ্ণ শোনিতের স্বাদ নি|
পুঁজরক্ত ঘুলিয়ে ওঠে আমার জঠরে
A+, B+.... কাঁচা রক্তের চরিত্রে
চিনে নিতে চাই আমার ভারতকে|

ছিন্নভিন্ন মানচিত্রের দিকে দিকে আওয়াজ ওঠে
আমি ভারত, আমি ভারত!

আমি ভারত
আমার গোমাতা ধর্ষিত!
আমার ম্লেচ্ছ রক্ত চাই!

আমি ভারত
আমার ছেলেটাকে তুলে নিয়ে গেছে
মাসখানেক হলো
ক্যাম্পে ক্যাম্পে ঘুরে
শুধু জানতে চেয়েছি
কোথায় গেলে এক মুঠো মাটি দিতে পারব
আমার আব্দুলের লাশে?
ভারতের দেহরক্ষীরা আমার আমিনাকে ডেকেছে আজ রাতে
আজ আমিনা জানতে পারবে সেই গুপ্ত গুহার হদিশ
যেখানে আব্দুলরা হারিয়ে যায়|

আমি ভারত
আমার বাবা-কাকাদের মন্দিরে ঢুকতে দেয় কখনো
কিন্তু আজ দরজায় সাহায্যপ্রার্থী বর্ণ ভারত
আজ আমার হাতে বৈদিক ত্রিশূল
যার ফালায় চিড়ে ফেলেতে হবে
ওই বেজন্মা সন্তানসম্ভাবা বেশ্যাদের জঠর!

আমি ভারত
আমার ঝর্না কারখানার কালো বিষ
আমার জঙ্গলে জঙ্গলে চিমনির সারি
যে মাটি কে ঈশ্বর জ্ঞানে পুজো করে গেছে
আমার একশ পুরুষ
আজ সে মাটির আমি দখলদার!

আমিও ভারত
ছেলেমেয়ে ইংরেজি মিডিয়াম|
মত মেইন, ফরেন ট্রিপ
কিন্তু ভয় লাগে
“ওরা” নাকি আমাদের পিছে টেনে রাখে|
যতসব কৃমি কীটমাকর
আমাদের ট্যাক্স সব চুষে নিয়ে
ছিবড়ে করে দেয়...
ওদের না সাবরালে আমরা বাঁচব না!

আমি ভারত, আমি ভারত, আমি ভারত...
মানচিত্র গিলে খেতে চায়|
পুঁজরক্তের মিঠে নোনা স্বাদ
আমার গলা বেয়ে নামে|
আরো শানিত পেন্সিল চাই, আরো ক্ষুরধার!
নইলে মানচিত্র আঁকা হবে কেমনে?

শুড়িখানা



ভাঙ্গা বোতল কুড়িয়ে নেওয়া মেঘ
ঘুলিয়ে যাওয়া দিনের অবশেষ
আর এক পাইট, সস্তা শুড়িখানা
অল্প দামে বিস্মৃতিটা কেনা!

চড়া মেকআপ, বক্ষবিভাজিকা
এই আসরের উর্বশী মেনকা
ছুড়ে দেওয়া রঙ্গিন রঙ্গিন নোট
চড়ছে প্রেম অল্প আদর হোক|

চড়ছে গলাও, চলছে হঠাৎ হাত-
বন্ধুতা-শত্রুতা অকস্মাত
মিলছে সবই নামমাত্র দামে;
আসর জুড়ে চৈত্রসেল নামে!

নিশীথ রাত্রি রঙিন শুড়িখানা
প্রতি রাতেই নতুন মরণ জানা|
সকাল হলেই আবার বাঁচতে চাওয়া
(তবু) ঘর খুঁজতে শুড়িখানায় যাওয়া!

Wednesday 24 February 2016

ছায়া



অকস্মাত থমকে দাড়াই
কাকে যেন ফেলে এসেছি পথে|
কারোর যেন থাকার কথা ছিল
নাকি আমারই থাকার কথা ছিল অন্য কোনোখানে|
ভালো খাই ভালো পরি ভালো থাকি
আমার বাড়ি শান্তিনীর
আমার অফিস বিজয়কেতন
আমার দুঃখ নেই
কষ্ট নেই
চিন্তা নেই
নেই নেই......
কি যেনো থাকার কথা ছিল?
এই নেইরাজ্যে কোথা থেকে তো এর জবাব ধরে আনতে হবে!
এধার খুঁজি ওধার খুঁজি
ব্যাঙ্ক-র স্টেটমেন্ট এ খুঁজি
নতুন গাড়ির glovebox-এ খুঁজি
বৌ এর আঁচলে খুঁজি
মাতৃ পদতলে খুঁজি
কোনো সুদূর গভীর থেকে জবাব আসে:
হেথায় নয়, হেথায় নয় অন্য কোনো খানে...
পাগলের মতন এঘর ওঘর করি
আচমকা দেখি আরে কে শুয়ে বিছানায়
আমারই মতন তো দেখতে...
যেন শুয়ে শুয়ে স্বপ্ন দেখছে
কিন্তু আমি যদি স্বপ্ন দেখি
তাহলে এই “আমি” টা কে?
যে ছুটে বেড়াচ্ছে...
আচমকা খেয়াল করি ওই ঘুমন্ত আমিটা ছায়াহীন...

Tuesday 23 February 2016

পাগল



মাথা ভরা জটা, উকুনের বসবাস
ঠোট বেয়ে ঝরে ভুলে যাওয়া কোনো খিদে
পাগল বসেছে রাজপথ বরাবর
সাপ লুডো খেলে স্মৃতিগুলো দান দিয়ে|
১৫ অগাস্ট আসে যায় কতবার
দড়িতে ঝোলানো তিনরঙা হাতছানি,
শহীদবেদীতে কাস্তে হাতুড়ি আছে
ছুয়ে ছুয়ে দেখে কোনটা কতটা দামী!
ঢিল ছুড়ে যায় ইস্কুলে পড়া ছেলে
পুরনো ঘায়ে নতুন রক্ত ঝরে
“শালা বান্চোত মুতে দেব তোর মুখে”
ভদ্রলোকেরা ঠোট টিপে হাসি ছারে|
ঘোলাটে দৃষ্টি কোন স্মৃতি দেখে যায়
সুদূর কোন স্পর্শ আচম্বিতে
হাতরিয়ে খোঁজে ভুলে যাওয়া কানাগলি
আবছায়াপথ মিশে যাওয়া শেষ রাতে|
ভুলে যাওয়া এক সংখ্যা আদমশুমারি
পণ্যবাজারে গ্রাহক হবে না যে,
গণ-প্রজা কোনো তন্ত্র ধরেনি হাত
শুধু এক আকাশ মুক্তি পেয়েছে সে!